ডিআরইউর আলোচনা

প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন সাংবাদিকদের মর্যাদাবিরোধী

Passenger Voice    |    ০৩:২২ পিএম, ২০২২-০৪-১৫


প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন সাংবাদিকদের মর্যাদাবিরোধী

প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনটি ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে করছেন দেশের সাংবাদিকরা। একে গণমাধ্যমকর্মীদের মর্যাদা ও স্বার্থবিরোধী বলে মনে করছেন তারা। সে কারণে এ আইনের সংশোধনী চান সাংবাদিকরা। এ দাবি আদায়ে দেশের সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন: সাংবাদিকতার সংকট ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা উঠে আসে।

সভার মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে কয়েকজন সাংবাদিক বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষায় একটি আইন থাকা প্রয়োজন, এটা ঠিক। কিন্তু সে আইন যদি সাংবাদিকদের মর্যাদা বা অধিকার ক্ষুণ্ন করে, তাহলে সেটি গ্রহণযোগ্য নয়। এ আইনের সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানো হবে বলেও জানান ডিআরইউর নেতারা। এজন্য সদস্যদের মতামত আগামী শনিবারের মধ্যে বিভিন্ন প্রস্তাব ডিআরইউ কার্যালয়ে জমা দেয়ার আহ্বান জানান।

ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা। এছাড়া ডিআরইউর সাবেক নেতা, বর্তমান সদস্য ও বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা আলোচনায় অংশ নেন।

প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনের বিশ্লেষণ করে সিনিয়র সাংবাদিক ও ডিইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাংবাদিকরা শ্রমজীবী মানুষ হলেও সাংবাদিকতা একটি বুদ্ধিবৃত্তিক পেশা। সাংবাদিকদের জন্যও আইন জরুরি। কিন্তু সেটি যেন অধিকার ক্ষুণ্ন না করে। প্রস্তাবিত গণমাধ্যম আইনের চারটি বিষয়ের ওপর জোর দেন এ সাংবাদিক নেতা। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালের আইন ফেরত আনতে হবে এবং সেখানে ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে যুক্ত করতে হবে। দেশে বিদ্যমান যে শ্রম আইন আছে সেটির মাধ্যমেই সাংবাদিকদের ক্ষতিপূরণ, গ্র্যাচুইটিসহ বিশেষ অধিকার নিশ্চিত করাসহ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব। এসব বিষয় সংযুক্ত হলে আইনটি আমাদের আইন হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, গণমাধ্যমকর্মী চাকরির শর্তাবলি ২০২১-এ যে শিরোনামটি দেয়া হয়েছে সেখানে আমার আপত্তি। এর মধ্যে সাংবাদিকদের কোনো পরিচয় রাখা হয়নি। এ আইনের ক্ষেত্রে কারো মতামতও নেয়া হয়নি। তিনি আইনের বিভিন্ন ধারার সমালোচনা করে বলেন, ৫৪টি ধারার মধ্যে অন্তত ৩৭টিই সাংবাদিকদের স্বার্থবিরোধী। এ আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের সুবিধার বদলে জুলুম করা হবে বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ বলেন, প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনে অধিকার হরণ হয় এমন কোনো আইন পাস করতে দেয়া হবে না।

ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, প্রস্তাবিত আইনের মধ্যে কোনো ঝুঁকি ভাতার কথা উল্লেখ নেই। সাংবাদিকদের শাস্তির কথা ঠিকই বলা হয়েছে। প্রতিটি লাইনে লাইনে মালিক শব্দটি খুব গুরুত্বসহকারে উল্লেখ করা হয়েছে। খসড়ায় শব্দের অনেক বিচ্যুতি রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব সাংবাদিকদের সুচিন্তিত মতামত দেয়ার কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, মুক্ত আলোচনায় যেসব মতামত উঠে আসবে, সেগুলো একত্র করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সরবরাহ করবে ডিআরইউ।